শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আছি : মমতা

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আছি : মমতা

সুপার সাইক্লোন আমফানে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে প্রকাশ, একের পর এক জেলা থেকে বিপর্যয়ের খবর শুনে বুধবার রাতে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীকে দৃশ্যত বিধ্বস্ত দেখায়। সমগ্র দেশবাসীর কাছে সাহায্যের জন্য আর্জি জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ভাবে এই ঝড়কে না দেখে মানবিকতার দিক দিয়ে দেখুন। এখন রাজনীতি দূরে থাক। বাংলাকে ধ্বংস থেকে উন্নয়নের পথে ফের দাঁড় করাতে হবে। সবার সহযোগিতা চাইছি।’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘সব হিসেব উল্টে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কারো ভবিষ্যদ্বাণী মিললো না। পুরোটা বাংলার উপর দিয়ে গেল। করোনার জন্য অর্থনীতির অবস্থা শেষ। তার পর এই দুর্যোগ। কোনো রোজগার নেই। পুনর্গঠন করতে অনেক টাকা লাগবে।’

বিপর্যয়ের বিবরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এলাকার পর এলাকা ধ্বংস। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন ৫ লাখ মানুষকে সরাতে পেরেছে। ১৭৩৭ সালে এমন ভয়ঙ্কর ঝড় হয়েছিল। ওয়ার রুমে বসে আছি আমি। নবান্নে আমার অফিস কাঁপছে। একটা কঠিন পরিস্থিতির যুদ্ধকালীন মোকাবিলা করলাম। মাঝরাত পর্যন্ত হয়তো ঝঞ্ঝা চলবে। নন্দীগ্রাম, রামনগর এলাকায় বড় ক্ষতি। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা প্রায় ধ্বংস ঝড়ের দাপটে। মোট ক্ষতি এখনো হিসেব করা যায়নি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর— সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা, হাবড়া— সব জায়গাই বিপর্যস্ত।’

এ দিন তিনি রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রমের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘এত দিন কলকাতায় আছি। এমন ঝড় দেখিনি। সব শেষ করে দিয়ে গেছে। ১০-১২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিস্তারিত খবর পেতে সময় লাগবে।’

মুখ্যমন্ত্রী আরো জানান, ১৭৩৭ সালে এমন দুর্যোগ হয়েছিল। তখন অনেক মানুষের জীবনহানি হয়েছিল। এ বার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার ফলে জীবনহানি অনেকটা কম। তবে বাঁধ ভেঙেছে, সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন এলাকার পরে এলাকা। বাড়ি ভেঙেছে, গাছ পড়েছে, বহু এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে সরকারি কর্মীদের পৌঁছতে সময় লাগবে বলে জানান মমতা। বৃহস্পতিবার টাস্কফোর্সের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে ত্রাণের কাজে নামবে প্রশাসন।

মুখ্যমন্ত্রী আপাতত ত্রাণশিবির থেকে বাড়ি যেতে বারণ করেন। তিনি জানান, ঝড়ের গতিপথ বদলে গিয়েছে। কলকাতার উপর ১৩৫/১৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে গেছে। নবান্নেও অনেক কিছু ভেঙে গিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিঘা ও হাতিয়া দ্বীপের মাঝে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিমুখ বদলে তা সাগরে প্রথম আঘাত হানে। সেখান থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা হয়ে কলকাতায় আসে ঘূর্ণিঝড়। হাবড়া, বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে। এত বড় আকার ছিল যে যাওয়ার পথে সব শেষ করে দিয়ে গিয়েছে। খুব মন খারাপ। আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।’

এদিকে, রাজ্যের পরিস্থিতি জানতে মমতার সাথে যোগাযোগ করেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877